রাজধানীর নীলক্ষেত থেকেই বানানো হয়েছে খালেদা জিয়ার জাল সম্মাননা

0
598

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য ভাইরাল হয়েছে। বিএনপির দুর্নীতিগ্রস্ত চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নাকি গণতন্ত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন। আর এ কারণে তাকে ‘মাদার অব ডেমোক্র্যাসি’ সম্মাননা দিয়েছে বেনামি একটি কানাডিয়ান মানবাধিকার সংস্থা- হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন।

যদিও সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। কারণ খালেদা জিয়াকে দেয়া সনদপত্রে কোনো মানবাধিকার সংস্থার স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সনদপত্রটি জাল।

বাংলা নিউজ ব্যাংকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, নীলক্ষেতের বাকুশাহ মার্কেটে অবস্থিত দোকান থেকে তৈরি করা হয়েছে খালেদা জিয়ার সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেটটি। নীলক্ষেতের বাকুশাহ মার্কেটের কিছু দোকান ১০ মিনিটে সনদ তৈরি করার কাজ করে থাকে বলেও বিশ্বস্ত সূত্র তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নীলক্ষেতের এক দোকানি বলেন, এখানে প্রচুর কম্পিটিশন চলে। এ কারণে বাজারে টিকে থাকতে বিভিন্ন দোকান দ্রুত সার্ভিস দিয়ে থাকে। তাদের স্লোগান থাকে ১০ মিনিটে কার্য সম্পাদন। ফলে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অনেক সময় ভুল হয় কম্পিউটার অপারেটরদের। আর এ কারণেই হয়তো ভুলে খালেদা জিয়ার সনদে জাল স্বাক্ষর দিতে ভুলে গেছে সেই কম্পিউটার অপারেটর। যদিও বিএনপি নেতারা চাইলে আমরা স্বাক্ষর বসিয়ে দিতে পারবো। তবে সেই জন্য আলাদা ফি দিতে হবে তাদের। কারণ ডেলিভারি দেয়া কাজে পুনরায় সংশোধনে আমরা অতিরিক্ত চার্জ নেই। এ চুক্তিতে রাজি থাকলেই বিএনপি নেত্রী জাল সনদে আমরা আসল স্বাক্ষর বসিয়ে দেবো।মাদার অব ডেমোক্রেসি

এদিকে জাল সনদকে আসল আখ্যায়িত করে বিএনপি নেতারা গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি সনদ সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা মনে করি বেগম জিয়া একজন ‘মাদার অব ডেমোক্র্যাসি’। তাই তাকে সনদ দেয়া হয়েছে। কবে কখন দেয়া হয়েছে, সেটা বড় বিষয় নয়। সনদ আছে এটাই বড় কথা। সনদে স্বাক্ষর থাকা বড় বিষয় নয়। সনদ থাকাই বড় বিষয়।

আরও পড়ুনঃ নিজেদের সন্ত্রাসী তকমা ঢাকতেই ‘পেইড পুরস্কার’ নিয়ে প্রচারণায় বিএনপি

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপির পক্ষে লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তিকারী সংস্থা থেকে নেওয়া সাড়ে তিন বছর আগের ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ নামের সনদ গণমাধ্যমে দেখিয়ে বিএনপি বেগম খালেদা জিয়াকে হাসির পাত্রে পরিণত করেছে। গণমাধ্যমে দেখলাম বেগম খালেদা জিয়াকে কানাডার একটি সংস্থা, যাদের নাম তেমন কেউ জানে না, জন্মও খুব আগে নয়, তারা তাকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ বলে আখ্যা দিয়েছে। যেটি মির্জা ফখরুল সাহেব ২০১৭-১৮ সাল থেকে বলা শুরু করেছেন।’’

এ সার্টিফিকেট সাড়ে তিন বছর আগে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাড়ে তিন বছর পরে হঠাৎ বিএনপি নেতারা গণমাধ্যমের সামনে এসে কথাগুলো বললেন, তাতে পুরো বিষয় এবং বেগম জিয়াকে হাসির পাত্র বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএনপি আর কতো হাসির পাত্র হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে