বারবার ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের কথা বললেও সর্বশেষ ২৭ জানুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন করোনা সংক্রমণ কমলে বিএনপির [BNP] দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ কথা বলে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন মির্জা আব্বাসসহ পুরো বিএনপি দল।
মূলত রাজপথ বাদ দিয়ে নয়াপল্টনকেন্দ্রীক ঘরোয়া রাজনীতিতে পদার্পণ, আন্দোলনের নামে নেতা-কর্মীদের দীর্ঘ প্রতারণা, মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্য, নিয়মিত প্রেসের সামনে উদ্ভট বক্তব্য প্রদান এবং ভারসাম্যহীন রাজনীতির জন্য বিএনপির চরম অধঃপতন ঘটেছে। দলটি দেশবাসীর কাছে হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে।
বিএনপির নাম শুনলেই লোকজন এখন অবজ্ঞার হাসি হাসে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে ব্যাপক ট্রল চলে বলে জানান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির রাজনীতির কফিনের পেরেক ছিল ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সমূলে ধ্বংস করে দেওয়ার এই হীন প্রচেষ্টা বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বব্যাপী বিএনপিকে একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।
আরো পড়ুন:
- ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা : বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের দলিল
- তিন বছর আগের সনদ দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে হাসির পাত্র বানিয়েছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
- Mufti Hannan revealed Hawa Bhaban plot
এই গণহত্যার ঘটনায় জড়িত হিসেবে গ্রেপ্তারকৃত মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে জানা যায়, এই হামলার বিষয়ে সম্মতি ছিল খালেদা জিয়ার [Khaleda Ziya]। ঘটনার মূল পরিকল্পনকারী ছিলেন খালেদার পুত্র তারেক রহমান। যে কারণে পরবর্তীতে রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন খালেদা-তারেক। পরবর্তীতে বিভিন্ন ইস্যুতে নেতিবাচক কার্যকলাপের কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিএনপি।
গত এক দশকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপির হাইকমান্ড তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সাথে অনবরত প্রতারণা করেছেন। ঈদের পর আন্দোলন, বর্ষার পর আন্দোলন, শীতের পর আন্দোলন এবং সর্বশেষ করোনা কমলে আন্দোলন- এমন হাস্যকর মন্তব্য করে নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর কাছে হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে বিএনপি।
[বিএনপি নামটাই এখন হাসি-ঠাট্টার খোরাক জনগণের কাছে]
বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে হাইব্রিড ও বিত্তশালী নেতাদের মনোনয়ন দেয়া, নির্বাচনকালীন দলীয় সংঘাত, তৃণমূল কর্মীদের সাথে রাজনৈতিক প্রতারণার কারণে বিএনপির চরম অধঃপতন ঘটেছে। দীর্ঘ সময়েও দল গোছাতে না পারায় বিএনপির কর্মকাণ্ডে জনগণ হাসে। অনেকেই বিএনপিকে রাজনৈতিক দল নয় বরং সার্কাস পার্টি বলেও ট্রল করে।
রাজনীতি করতে হয় বলে কোনোমতে ঠেকা দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন ফখরুলরা, রিজভী, গয়েশ্বর, দুদুরা। দেশ ও জনগণের উন্নয়নে তাদের কোনো অবদান না থাকলেও বরাবর নিজেদেরকে জনগণের দল এবং ‘জনগণ আমাদের সাথে আছে’ দাবি করায় বিএনপিকে নিয়ে সর্বমহলে হাসাহাসি হয়।
তবে তারেক রহমানের ধ্বজভঙ্গ নেতৃত্ব এবং লক্ষ্যহীন রাজনীতির করণে ইতিমদ্যে বিএনপি ছেড়ে গেছেন অনেক হেভিওয়েট নেতা। তাদের মতে, স্বল্প শিক্ষিত-অর্ধ শিক্ষিত নেতারা দলকে নেতৃত্ব দেয়ায় বরাবরই বিএনপি ভুল পথে পরিচালিত হয়ে আসছে। অপকর্ম, দুর্নীতি, অর্থ-পাচার, রাজনৈতিক ব্যর্থতা, জনগণ ও নেতা-কর্মীদের সাথে প্রতারণা করে নিজেদের হাসির পাত্রে পরিণত করেছেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।
আরো পড়ুন: জিয়া পরিবারের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির একটি বড় উদাহরণ এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ
এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে বিএনপি নেতারা জনগণের কাছে আর মুখ দেখাতে পারবেন না। ইতিমধ্যে দলের অনেক নেতাই ক্ষুব্ধ। মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান তো দুদিন আগে টিভি টকশোতে নিজ দলের নেতাদেরকে ‘গরু-গাধা’ আখ্যা দিয়ে বলেই ফেলেছেন, তাদেরকে কর্মীরাই জুতাপেটা করবে।
বিএনপি নেতাদের নির্বুদ্ধিতা জনগণের হাসির খোরাক যোগায়। অনলাইনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল, রুহুল কবির রিজভীসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে নিয়মিত চলে ট্রল আর মিমিক্রি। দুবার সরকার পরিচালনাকারী দলটি ক্ষমতার লোভের কারণে আজ জোকারের দলে পরিণত হয়েছে।
আরো পড়ুন :