দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিরমুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কূটনৈতিক এবং মিডিয়া ক্যু করার পরিকল্পনা করছে বিএনপি, এমন তথ্য এসেছে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। জানা গেছে, নতুন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুকে লন্ডনে তলব করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জানা গেছে, আইনি ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে এবার বিএনপিপন্থী কূটনীতিকদের সহায়তায় মিডিয়া ক্যু করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চান তারেক। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা তৈরি, ফান্ড গঠন, লবিস্ট নিয়োগ ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে মত বিনিময় করতে মিন্টুকে লন্ডনে ডেকেছেন তিনি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আদেশে আগামী সপ্তাহে লন্ডন যেতে পারেন বিএনপির এই ব্যবসায়ী নেতা। সব ঠিকঠাক থাকলে লন্ডনের অদূরে নটিংহ্যাম ফরেস্ট এলাকার এক বিএনপি নেতার বাগানবাড়িতে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মিন্টু।
লন্ডনে তারেক রহমানের বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখে এমন একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রও এই খবরের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে।

লন্ডনের কিংস্টন এলাকার একটি সূত্র বলছে, রাজনৈতিক ও আইনি প্রক্রিয়া খালেদা জিয়ার মুক্তি আদায় বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয় বলে বিশ্বাস করেন তারেক। তাই কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি ও মিডিয়া ক্যু করেই খালেদাকে মুক্ত করতে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন তিনি। তারেককে এই পরামর্শ দিয়েছেন তার আন্তর্জাতিক লবিস্ট ও আইনি পরামর্শক লর্ড কার্লাইল।
এজন্য কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খালেদা জিয়াকে নির্দোষ দাবি করে এবং সরকারকে ব্যর্থ হিসেবে তুলে ধরতে মিডিয়া ক্যু করার পথে হাঁটছেন তারেক। সেজন্য অবশ্য কার্লাইল বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংস্থাকে উৎকোচ প্রদানের লক্ষ্যে ৫ মিলিয়ন পাউন্ডের ফান্ড গঠনেরও পরামর্শ দেন তারেককে।
আরো পড়ুনঃ লোডশেডিংকে পুঁজি করে বিএনপি গুজব ছড়াচ্ছে
সূত্রটি আরও জানায়, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লবিংয়ে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তা লন্ডন থেকে সংস্থান করতে পারবেন না তারেক। কারণ অবৈধ ও সন্দেহজনক অর্থ লেনদেন, অর্থের উৎসের তথ্য না দিতে না পারায় তারেকের একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যে ফ্রিজ করে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। তাই এত বড় মিশন কমপ্লিট করতে যে অর্থের প্রয়োজন তার সংস্থান করতে মিন্টুর সহায়তা চান তারেক। কারণ মিন্টুর লন্ডনে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, প্যান্ডোরা, প্যারাডাইস এবং পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে ফাঁস হওয়া নথিপত্রে দেখা গেছে, ট্যাক্স হেভেনে অবৈধ সম্পদের বিপুল সম্ভার মিন্টুর।
এদিকে লন্ডন বিএনপির রাজনীতিতে গুঞ্জন উঠেছে, এই মিশন সফল হলে মিন্টুকে স্থায়ী কমিটির পদ দেয়াসহ আগামীতে সরকার গঠন করলে অবাধ বাণিজ্যের সুযোগ এমনকি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ারও টোপ দিয়েছেন তারেক। এখন মিন্টু দলের এমন পরিস্থিতিতে অর্থ খরচের যৌক্তিকতা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেন সেটি দেখার বিষয়।
আরো পড়ুনঃ