সারা বিশ্বের কালো টাকার আড়ত হিসেবে খ্যাত সুইজারল্যান্ডের সুইস ব্যাংক। হিসাব বহির্ভূত আয় জমা রাখার এক অভিনব ব্যাংক এটা। সম্প্রতি সুইস ব্যাংকে কে বা কারা টাকা রেখেছে তার তালিকা নিয়ে হুলস্থূল কাণ্ড-কারখানা চলছে।
কিন্তু কথা হলো- কিভাবে বাংলাদেশিরা এই সুইস ব্যাংকের সন্ধান পেলো? কার হাতে এর সূত্রপাত?
আরও পড়ুন : বন্যার্তদের জন্য ত্রাণের অর্থ সংগ্রহ করে নিজেদের দলের ফান্ড ভারি করছে বিএনপি নেতারা
জানা গেছে, বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বপ্রথম সুইস ব্যাংকে অবৈধ টাকা রাখেন খালেদা জিয়ার বড় পুত্র তারেক রহমান। ২০০১-০৬ সাল বাংলাদেশে অঘোষিতভাবে রাজত্ব করেছিলেন তারেক জিয়া। দুর্নীতির এই বরপুত্র তারেক জিয়া যার সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট কল্পকথাকেও হার মানিয়েছে। শাস্তি এড়াতে কোটি কোটি টাকা ডোনেশন দিয়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে আছেন তারেক।
সেখানে পালিয়ে নিজের বিলাসী জীবন চলমান রেখেছেন স্বৈরশাসক জিয়ার বড় পুত্র। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে ব্রিটিশ সরকার তদন্ত শুরু করে। বিশেষ করে লন্ডনে বসে কোনরকম বৈধ আয়ের উৎস ছাড়াই তিনি যে জীবন যাপন করছেন এ নিয়ে শুরু হয় রহস্য।
আরও পড়ুন : লন্ডনে তারেকের পেশা এখন জুয়া
তদন্তের একপর্যায়ে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের তারেক জানান তার টাকার একটি বড় অংশ আসে ক্যাসিনোতে জুয়া খেলার মাধ্যমে। এছাড়া বিভিন্ন মহল তাকে যে অনুদান দেয় সেই টাকা তিনি যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসেন।
বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের পক্ষ থেকে ১৪৭৫ কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকে জমা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এর বাইরেও সুইজারল্যান্ডে ২০০১ সালে তারেক প্রথম একটি যৌথ একাউন্ট করে। এই যৌথ একাউন্ট তারেকের সাথে আরেকজন একাউন্ট হোল্ডার ছিলেন তার বন্ধু গিয়াস উদ্দীন আল মামুন। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সময়ে সুজারল্যান্ডের সুইস ব্যাংকে তারেকের স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : দেশে কমিটি বাণিজ্য ও দুর্নীতির টাকায় লন্ডন ক্যাসিনোতে ফূর্তি করছে তারেক
২০০৮ সালে তারেক সুইস ব্যাংকের একাউন্ট থেকে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৫ কোটি টাকা লন্ডনের ব্যাংকে জমা করেন এবং একই সময়ে লন্ডনের আরেকটি ব্যাংকে ৫০ কোটি টাকা স্থানান্তর করেন। ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে সুইস ব্যাংকে টাকা জমাও রাখছেন, আবার এখান থেকে টাকা লন্ডনের বিভিন্ন ব্যাংকে স্থানান্তরও করা হচ্ছে। এখন সুইস ব্যাংকে তার জমাকৃত টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।
[বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বপ্রথম সুইস ব্যাংকে অবৈধ টাকা রাখেন খালেদা জিয়ার বড় পুত্র তারেক রহমান]
বিশিষ্টজনরা বলছেন, তারেক জিয়ার হাত ধরেই সুইস ব্যাংকের সন্ধান পায় বাংলাদেশ। আর তারেক এমন একজন ব্যক্তি যিনি রাষ্ট্রের টাকা ভোগ করেছেন ঠিকই কিন্তু রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য কোন কাজই করেননি। বরং দেশকে ঠেলে দিয়েছেন ক্ষতির মুখে। পৃথিবীতে যদি দুর্নীতির জন্য পদক দেয়ার প্রচলন থাকতো, তাহলে তারেক শুধু পদকই পেত না, রোল মডেল হিসেবে গণ্য হতো।
আরও পড়ুন :