গয়েশ্বরের কূটবুদ্ধিতে দেশের অমূল্য খনিজ গ্যাস সম্পদ ধ্বংস, বিএনপির ভয়ঙ্কর চক্রান্ত ফাঁস!

0
780
গয়েশ্বর

বিএনপি কখনই দেশের মঙ্গল চায়নি। ক্ষমতায় থাকতে তারা দেশের মূল্যবান খনিজ সম্পদ বিদেশিদের হাতে নামমাত্র মূল্যে এবং বড় কমিশনের বিনিময়ে তুলে দিয়েছিল। বিদেশি কোম্পানির আনাড়ি লোকজনের হাতে তুলে দিয়ে দেশের গ্যাসক্ষেত্র সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে শেষ করে দিয়েছিল মূল্যবান খনিজ গ্যাস। যার ক্ষতিপূরণের ৮৫০০ কোটি টাকা আজও পায়নি বাংলাদেশ। নাইকো দুর্নীতির মামলা তো আন্তর্জাতিক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। যার সাথে জড়িত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার পুত্র তারেক রহমানসহ দলের বড় বড় নেতা এবং তৎকালীন দুর্নীতিবাজ আমলারাও। যার ফলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছিল।

বিএনপি আমলের পর দেশ যখন আবারও রুগ্নদশা কাটিয়ে সঠিক ট্র্যাকে উঠে উন্নয়নের মহাসড়কে চলতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ঘুণপোকার মত ভেতরটা কুরে কুরে শেষ করতে লেগেছে বিএনপি ও দেশবিরোধী দলগুলো। তাদের একটি নতুন ষড়যন্ত্র ফাঁস হলো এবার। যা শুনলে চমকে উঠবেন দেশবাসী।

বিগত বছরগুলোতে দেশের মূল্যবান খনিজ গ্যাস সংকটের কারণে চাপের মুখে পড়ে গেছে উৎপাদন। চাপ কমাতে উচ্চমূল্যে তরল গ্যাস আমদানি করতে হচ্ছে সরকারকে। বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করতে, কৃষি জমির জন্য সার উৎপাদনসহ বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখতে, বিদ্যুৎ খাত সচল রাখতে বিভিন্ন দেশ থেকে গ্যাস আমদানি করতে হচ্ছে। যার ফলে উৎপাদন খরচও বাড়ছে, জনগণের ওপরেও চাপ পড়ছে। নিজস্ব খনিজ গ্যাসের পরিমাণ কমে আসায় গ্যাসের সংকট দূর হচ্ছিল না।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ না থাকায় লোকজন বিপাকে পড়েছেন। ব্যয়বহুল সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারের ফলে স্বল্প আয়ের মানুষের আয়ের বড় অংশ চলে যাচ্ছিল জ্বালানীর পেছনে। বহুবিধ সমস্যার ফলে সরকার কয়লাসহ বিকল্প জ্বালানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অধিক বিনিয়োগ করছিল। কিন্তু কেন গ্যাসের এই তীব্র সংকট? অনুসন্ধানে নামে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। কোথায় অধিক গ্যাস খরচ হচ্ছে? শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে এলো থলের বিড়াল।

আরও পড়ুনঃ ভারত নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির এপিঠ-ওপিঠ

বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বাসাবাড়িতে, দোকানে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যেখানে মাসকাবারি নির্ধারিত বিলের বিনিময়ে সরকারি গ্যাস সংযোগ রয়েছে, সেখানে দিনরাত অব্যাহতভাবে গ্যাস জ্বালিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে অপচয় করা হচ্ছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভয়ঙ্কর তথ্য। যেহেতু মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের বিল দিতে হয়, তাই গ্যাস জ্বালিয়ে রেখে ওইসব এলাকায় গ্যাসের তীব্র সঙ্কট ঘটানোর জন্যই এই নষ্ট বুদ্ধিটা দেওয়া হয় অফিসিয়ালি। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই বুদ্ধিটা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

[গয়েশ্বরের কূটবুদ্ধিতে দেশের অমূল্য খনিজ গ্যাস সম্পদ ধ্বংস, বিএনপির ভয়ঙ্কর চক্রান্ত ফাঁস!]

গয়েশ্বরের কূটবুদ্ধি মেনে নিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা তিতাস, বাখরাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার গ্যাস উড়িয়ে দেশে তীব্র সংকট সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রাখছেন। সরকারকে চাপে ফেলতেই তারা এই অপকর্মটি করেছেন বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। সরকারি সংযোগের গ্যাস সংকটের কারণে বেসরকারি এলপিজি কোম্পানি থেকে অধিক মূল্যে সিলিন্ডার নিতে বাধ্য হচ্ছেন জনগণ, ফলে তৈরি হচ্ছে জন-অসন্তোষ, পিক টাইমে লোকজন রান্না করতে পারছেন না, গ্যাসের চাপের জন্য মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তাই সরকারও বাধ্য হচ্ছে অধিক মূল্যে বিদেশ থেকে তরল গ্যাস আমদানি করতে।

অনুসন্ধানে এই ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র বেরিয়ে এসেছে।

৩০ মাস গ্যাসের বিল না দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস জ্বালিয়ে নষ্ট করেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের পর আর গ্যাসের বিল দেননি এই বিএনপি নেতা। তাই পৌনে ২ লাখ টাকার বকেয়া বিলের কারণে আজ গয়েশ্বরের বাড়ির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস। সোমবার রায়ের বাজারের শেরেবাংলা সড়কে গয়েশ্বরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বকেয়ার দায়ের কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

তিতাসের উপমহাব্যস্থাক নজিবুল হক বলেন, ২২৬/১, শেরেবাংলা রোডে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে অনুমোদিত ৭টি ডাবল বার্নার সংযোগের ৩০ মাসের বিল বকেয়া ছিল। তিনি সর্বশেষ বিল জমা দিয়েছেন ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত গত ৩০ মাস কোনো বিল পরিশোধ না করলেও নিয়মিত চুলাগুলো ব্যবহার করছিলেন। তার মোট বকেয়া বিল দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৬৮ টাকা। বিল বকেয়া থাকায় তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

[গয়েশ্বরের কূটবুদ্ধিতে দেশের অমূল্য খনিজ গ্যাস সম্পদ ধ্বংস, বিএনপির ভয়ঙ্কর চক্রান্ত ফাঁস!]

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমের সামনে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে তিতাস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা অনুসন্ধানে বিএনপির এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আভাস পায়। বিএনপির বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের যে তালিকা সরকারের হাতে রয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সরকারি সংযোগের গ্যাস ব্যবহার করেন, তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল একটি সূত্র।

আরও পড়ুনঃ

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে