বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার (৪ঠা মে) ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় সকালে ওয়াশিংটন থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। লন্ডনে তিনি প্রিন্স চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র এবং সরকারপ্রধানরা এই অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য লন্ডনে সফর করছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সময় শুক্রবার লন্ডনে পৌঁছবেন বলে জানা গেছে। তিনি লন্ডন সফরে গেলে সবসময়ের মত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, বাংলাদেশের সাফল্যে গর্বিত লন্ডন প্রবাসী বাঙালিরা এবং সেখানকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
আবার একইভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের পরিবার, জামায়াত কর্মীরা এবং লন্ডনে পলাতক বিএনপির নেতা তারেক রহমানের অনুগতরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এর আগেও শেখ হাসিনার লন্ডন সফরের সময় বিশৃঙ্খলা ঘটিয়ে ও পরে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাঙচুর করায় বিএনপির অনেক নেতাকে ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তারেক রহমানকেও এসব মামলার জন্য জবাবদিহিতা করতে হয়েছিল। তাই এবার ব্রিটিশ গোয়েন্দারা শেখ হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে লন্ডনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনেক বেশি সতর্ক। যেন কোনভাবেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের এমন অনুষ্ঠানের মুহূর্তে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়। জানা গেছে, সরকারি বাহিনী ও স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড তথ্য পেয়েছে, বিএনপি নেতা আবদুল মালেক ওরফে ভোঁতা মালেকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন সফরের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হতে পারে।
[প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের কঠোর নজরদারিতে তারেক]
উল্লেখ্য, এর আগে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সাথে সম্পর্কের ৫০ বছর অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সেখানে জামায়ত হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। পরে আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাদের প্রতিহত করে। এসময় মার্কিন পুলিশ বিএনপির কয়েকজন নেতাকে আটক করে। বিদেশের মাটিতে এ ধরনের ঘটনা দেশের জন্য সম্মানহানিকর। ঠিক একই কাণ্ড লন্ডনেও ঘটাতে চায় তারেক। এজন্য তিনি লন্ডন প্রবাসী বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এ কারণেই ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ শেখ হাসিনার জন্য উচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন এবং এরই অংশ হিসেবে তারেক রহমানের ওপর নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
একটি সূত্র বলছে, ব্রিটিশ পুলিশের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা তারেক রহমানকে জানিয়ে দিয়েছে এ সময় কোনো রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বা উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাষ্ট্রীয় ভিভিআইপি অতিথিদের সফরে বিঘ্ন ঘটিয়ে ব্রিটিশ ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ঘটনা ঘটালে ব্রিটিশদের ক্ষেত্রে ১০ বছরের জেল এবং আশ্রিতদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার বিধান রয়েছে ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন আইনে। সে কারণেই তারেক রহমানের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে।
ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য সফরের সময় তারেক রহমানের কর্মীরা বেশ কয়েকবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। যদিও ব্রিটিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং শেষ পর্যন্ত কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটতে দেয়নি। সেসময় তারেক রহমানের নির্দেশে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা করে বিএনপির কর্মীরা এবং সেখানে একটি আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। এরকম পরিস্থিতি যেন এবার না হয় সেজন্য আগে থেকেই সতর্ক লন্ডন পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।
[প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের কঠোর নজরদারিতে তারেক]
সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে ব্রিটিশ পুলিশ কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বলেছে, প্রিন্স চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আগত রাজকীয় অতিথিদের সফরে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসূচি ইতিমধ্যে ব্রিটিশ পুলিশকে জানানো হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছেন, শেখ হাসিনা যে সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি প্রতিহত করতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে প্রিন্স চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে আগামী ৯ই মে বাংলাদেশে ফিরবেন।
আরও পড়ুনঃ