এক্সক্লুসিভ : বিএনপি নেতা রিজভীর বাবা কুখ্যাত রাজাকার কুদ্দুসকে বস্তায় ভরে নদীতে ফেলা হয়েছিল

0
707
রিজভী

একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় তার এক লেখায় তুলে ধরেছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর পিতৃপরিচয়। নতুন প্রজন্মের কাছে রাজাকার ও তার সন্তানের আস্ফালন চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর জন্যই স্বদেশ রায় মুখোশ উন্মোচন করেছেন।

id_of_a_razakarরিজভীর বাবা আব্দুল কুদ্দুস ছিলেন বগুড়ার কুখ্যাত রাজাকার। রাজাকারের খাতায় নাম লেখানোর কারণে ১৯৭১ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে তাকে পুলিশে নিয়োগ দেয় পাকিস্থানি প্রশাসন এবং বগুড়ার একটি থানায় তার পোস্টিং হয়। সেই থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় কুদ্দুস ও ওই এলাকার রাজাকার বাহিনী মিলে একটি গ্রামে হামলা চালিয়ে অধিকাংশ পুরুষকে হত্যা করে, নারী ও কিশোরীদের ধর্ষণ করে এবং পাকিস্থানিদের হাতে তুলে দেয়। সেই সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধানে গ্রামের পর গ্রাম আগুন জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয়, ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে লুটপাট চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এমনই ছিল তাদের কর্মকাণ্ড।

আরও পড়ুন : রাজাকারদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় গণহত্যা ও ধর্ষণ করেছে পাকিস্তানি সেনারা

ডিসেম্বরে ওই এলাকা মুক্ত হওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পলাতক রাজাকার, দালাল ও পাকিস্থানিদের হয়ে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যদের খুঁজে বের করে। পরিবার ও স্বজনহারা বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রচন্ড ক্ষোভে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেই রাজাকারদের প্রচন্ড শাস্তি দেন। এলাকায় খবর নিয়ে তারা এই রাজাকারদের একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা করেন, যারা পৈশাচিকতায় সবার চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। সেই তালিকায় রিজভীর বাবা আব্দুল কুদ্দুসও ছিলেন। রাজাকারদের আটকের খবর শুনে গ্রামবাসী এগিয়ে আসেন। রাগে-ক্ষোভে কয়েকজন রাজাকারকে জীবিত অবস্থায় বস্তায় ভরে পাথর বেঁধে নদীতে ফেলে দেন তারা।

razakarঅনেকেই বস্তাবন্দী অবস্থায় নদীতে ডুবে মারা যান। কিন্তু রিজভীর বাবা আব্দুল কুদ্দুস কপালজোরে বস্তা ছিঁড়ে বেরিয়ে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হন। পরে তিনি পরিবার নিয়ে দিনাজপুর ও এর আশপাশের এলাকায় পালিয়ে যান। দীর্ঘদিন পরিচয় গোপন করে গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। দালাল আইনে আটক করার জন্য তার নাম তালিকাভুক্ত হলেও তিনি পালিয়ে থাকতে সক্ষম হন। ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারকে নৃশংস কায়দায় হত্যা করার পর দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়। পাকিস্থানি প্রেতাত্মারা গর্তের ভেতর থেকে সুড়সুড় করে বেরিয়ে আসতে থাকে। কুদ্দুসকেও প্রকাশ্যে দেখা যায়।

আরও পড়ুন : বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, ক্ষমতা দখলের লোভে জামায়াতকে পাশে চায় বিএনপি

দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পরেও লোকজন তাকে ভুলে যায়নি। জনরোষের ভয়ে বগুড়ায় আর ফিরে যেতে পারেননি কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল কুদ্দুস। তাই নিরাপদ ভেবে পরিচয় গোপন করে রাজশাহী এলাকায় থিতু হয় এই দেশবিরোধী পরিবারটি। আজও বৃহত্তর বগুড়া এলাকার জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে এসব ইতিহাস তাজা। চাইলে যে কেউ তাদের কাছ থেকে এসব তথ্য জেনে নিতে পারবেন। বিএনপির এই প্রজন্মের কর্মী-সমর্থকরা কাদের পেছনে রাজনীতি করছেন, কাদেরকে তারা নেতা মনে করেন, জানা উচিৎ। রাজাকারের সন্তানদেরকে তারাই দলের মুখপাত্র বানিয়েছেন।

[এক্সক্লুসিভ : বিএনপি নেতা রিজভীর বাবা কুখ্যাত রাজাকার কুদ্দুসকে বস্তায় ভরে নদীতে ফেলা হয়েছিল]

বিএনপি-জামায়াতএকাত্তরের রাজাকার ও দেশবিরোধী লোকজন এবং তাদের বংশধর, জামায়াত-বিএনপির মদদে ও পাকিস্থানের পৃষ্ঠপোষকতায় সৃষ্ট জঙ্গিরা আজও একাট্টা। তারা একটাই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলেছে- বাংলাদেশকে পাকিস্থানের ভাবধারায় নিয়ে যাওয়া। এদেশে যদি একটা ১৫ই আগস্ট না ঘটতো, দেশ যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠতো, তাহলে রাজাকারের সন্তানরা তাদের বাবাদের আদর্শ লালন-পালন করার সুযোগ পেত না, সেই সাহস তাদের হতো না। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, রাজাকারের সন্তান রাজাকারই হয়েছে। তারা যেন পাকিস্থানি ভাবাদর্শ লালন করে, বিএনপি-জামায়াত তাদের জন্য সেই পরিবেশই নিশ্চিত করেছে দীর্ঘকাল।

আরও পড়ুন :

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে