তারেক রহমান ও বিএনপি জোটের ইসরাইল সংযোগ এবং নিশ্চুপ থাকা। নেপথ্যে কি?

0
153
ইসরাইল

ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার করেছেন। জাতিসংঘে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ইসরাইলের এই গণহত্যা নিয়ে একেবারেই নিশ্চুপ বিএনপি। দলটির প্রধান তারেক রহমান থেকে শুরু করে মির্জা ফখরুল, রুহুল কবীর রিজভী সবাই নিশ্চুপ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছে দলটি।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশে ইসরাইলের কনস্যুলেট খোলার বিষয়ে আলোচনা হয়। তখন বাংলাদেশ সফর করেন ৫জন মোসাদ এজেন্ট।

তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জ্যাকব মিল্টন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ব্রিফিংয়ে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে। সেই সঙ্গে কবে ‘ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের’ (স্বাধীনতাকামী মানুষদের) বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র জানতে চান এই ব্যক্তি।

মেন্দি এন সাফাদি গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের আলোচনা হচ্ছে। বিরোধী জোটকে ক্ষমতায় আনার জন্য ইসরাইল সব ধরণের সহায়তা করবে।

মেন্দি এন সাফাদি তারেক রহমানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেন। যেখানে তৎকালীন সময়ে বিএনপির কৃষি বিষয়ক সহসম্পাদক ও তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ কৃষিবিদ চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল ফারুক ও বিএনপিপন্থি সাংবাদিক মামুন স্ট্যালিন উপস্থিত ছিলেন।

[তারেক রহমান ও বিএনপি জোটের ইসরাইল সংযোগ এবং নিশ্চুপ থাকা। নেপথ্যে কি?]

তারেক রহমানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সাফাদি কথা বলেন এবং তাকে দেশে প্রত্যাবর্তনে সহায়তা করার বিষয়ে জানান। তিনি বলেন, ‘শুভ সকাল তারেক রহমান। আমি মেন্দি। আপনার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি মনে করি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিয়ে আমি কাজ করছি। যেসব তথ্য আমি চেয়েছি এবং যেগুলো পেয়েছি; সব বিষয়েই আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমাদের মিশন সম্পর্কে কথা হয়েছে।’ তারেক রহমানকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সাফাদি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমার পেছনে যে টিম রয়েছে, তারা আমাদের মিশন সফল করার জন্য কাজ করছে। এ টিম বাংলাদেশের মানুষের মুক্ত জীবন ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করবে।’

তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনারও আশ্বাস দিয়েছেন মেন্দি সাফাদি। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, এ টিম আপনাকে বাংলাদেশের নেতা হিসেবেও প্রত্যাবর্তন করাবে।’ এছাড়া দেশে দণ্ডিত হয়ে লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সাফাদি বলেন, ‘ধন্যবাদ। আশা করি, আপনার সঙ্গে খুব শিগগিরই লন্ডনে দেখা হবে।’

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি সাফাদি তারেক রহমান সহ বিরোধী জোটের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি স্বীকার করেন। সেখানে মেন্দি এন সাফাদি আরও জানান, বিরোধী জোট (বিএনপি ও তার জোট) বাংলাদেশে ইসরাইলকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়েও সম্মতি প্রদান করেছে।

[তারেক রহমান ও বিএনপি জোটের ইসরাইল সংযোগ এবং নিশ্চুপ থাকা। নেপথ্যে কি?]

২০১৫ সালে বিএনপি’র সঙ্গে ইসরাইলের সংযোগের বিষয়টি সরাসরি আলোচনায় আসে যখন দলটির নেতা আসলাম চৌধুরী ইসরাইলের নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এরপর আমির খসরু সহ একাধিক বিএনপি নেতার সঙ্গে মেন্দি এন সাফাদির বৈঠক ও আলোচনা হয়।

বিএনপির ইসরাইল সংযোগ, ইসরাইলের সঙ্গে ঘনিষ্টতা, একাধিক বৈঠক, কার্যক্রম এবং সর্বপরি ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের নির্বিচারে গণহত্যা নিয়ে নিশ্চুপ থাকার বিষয়ে কোন আলোচনা নেই তাদের জোট ভুক্ত দলগুলোর মধ্যে। এমনকি জামায়াত ইসলামও বিষয়টি নিয়ে সারসরি প্রতিবাদ বা ইসরাইলের গণহত্যা নিয়ে আলোচনা করছে না। যা স্পষ্ট যে জোটগতভাবে মেন্দি এন সাফাদির বর্ণনা করা ‘সরকার বিরোধী জোট’ হিসেবে সকলেই ইসরাইলের পক্ষে মৌন অবস্থানে রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ

মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে